ভূমিকা: প্রবাসীদের অধিকার ও সহায়তার প্রতি অঙ্গীকার
বাংলাদেশি প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত। তাদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে চলেছে এবং একই সঙ্গে তারা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক জীবিকা নির্বাহ করছেন । এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং তাদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রতিবেদনটি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সহায়িকা হিসেবে প্রণীত হয়েছে, যেখানে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রদত্ত সেবা, আইনি প্রক্রিয়া এবং জরুরি পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
- ভূমিকা: প্রবাসীদের অধিকার ও সহায়তার প্রতি অঙ্গীকার
- অধ্যায় ১: বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহের পরিচিতি
- অধ্যায় ২: প্রবাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার সেবা
- ২.১. পাসপোর্ট সম্পর্কিত সেবা
- ২.২. ডকুমেন্টের অ্যাটেস্টেশন
- ২.৩. জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন
- ২.৪. গুরুত্বপূর্ণ সারণি: সেবা, ফি ও প্রক্রিয়া (মিশন-ভিত্তিক তালিকা)
- অধ্যায় ৩: বিদেশে বিপদ ও মৃত্যু: করণীয় ও সহায়তা
- অধ্যায় ৪: প্রবাসী কল্যাণ: সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা
- ৪.১. ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড (WEWB)
- ৪.২. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
- ৪.৩. আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM)
- অধ্যায় ৫: প্রধান দেশগুলোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাই কমিশনের যোগাযোগের বিবরণ
- অধ্যায় ৫: প্রবাসী কল্যাণ হটলাইন ও জরুরি যোগাযোগ
- ৫.১. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হটলাইন
- ৫.২. অন্যান্য জরুরি হটলাইন
- প্রবাসীদের প্রতি বার্তা
- দায়বর্জন-বিবৃতি:
এই প্রতিবেদনটি কয়েকটি মূল অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রতিটি অধ্যায় প্রবাসীদের জীবনের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহের পরিচিতি, প্রয়োজনীয় কনস্যুলার সেবা, জরুরি পরিস্থিতিতে করণীয় এবং প্রবাসী কল্যাণমূলক বিভিন্ন সহায়তা। এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সকল তথ্য সরকারি ওয়েবসাইট, আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট এবং নির্ভরযোগ্য সংবাদ সূত্র থেকে সংগৃহীত হয়েছে । তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য একাধিক উৎস ব্যবহার করা হয়েছে এবং প্রতিটি তথ্যের পাশে প্রাসঙ্গিক সূত্র আইডি উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রতিবেদনের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। এই নির্দেশিকাটি প্রবাসীদের জন্য একটি অপরিহার্য ও নির্ভরযোগ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা যায়।
অধ্যায় ১: বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহের পরিচিতি
১.১. বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক উপস্থিতি
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে মোট স্বীকৃত দেশের সংখ্যা ১৯৫টি । এই ১৯৫টি দেশের মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য এবং দুটি (ভ্যাটিকান সিটি ও ফিলিস্তিন) পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র । এই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের কল্যাণে বিশ্বের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও মিশন পরিচালনা করে। এই কূটনৈতিক উপস্থিতি প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের জন্য একটি শক্তিশালী সহায়ক কাঠামো তৈরি করে।
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার কূটনৈতিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৮০টি কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশন রয়েছে, যার মধ্যে ৫৯টি দূতাবাস বা হাই কমিশন, ২০টি কনস্যুলার মিশন এবং নিউইয়র্ক সিটি ও জেনেভায় জাতিসংঘের দুটি স্থায়ী মিশন অন্তর্ভুক্ত । এই মিশনগুলো বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রবাসীদের জন্য সরকারি সেবার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। তবে, সব দেশে বাংলাদেশের সরাসরি কূটনৈতিক উপস্থিতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রবাসীরা নিকটবর্তী বা অ্যাক্রিডিশনপ্রাপ্ত মিশনগুলোর মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারেন ।
দূতাবাস এবং হাই কমিশনের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে দূতাবাসকে ‘হাই কমিশন’ বলা হয় । যেমন, যুক্তরাজ্য, ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ আফ্রিকাতে বাংলাদেশের হাই কমিশন রয়েছে। অন্যদিকে, কনস্যুলেটগুলো সাধারণত দূতাবাস থেকে নিম্ন পর্যায়ের মিশন যা কোনো দেশের নির্দিষ্ট শহর বা অঞ্চলে অবস্থিত হয়। এই মিশনগুলোর প্রধান কাজ হলো বাণিজ্য, ভিসা, পাসপোর্ট ও প্রবাসীদের কল্যাণমূলক সেবা প্রদান করা । নিউইয়র্ক এবং দুবাইয়ের মতো শহরগুলোতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল রয়েছে। এছাড়া, ভারতের কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই, আগরতলা ও গুয়াহাটিতে সহকারী হাই কমিশন বা ডেপুটি হাই কমিশন স্থাপন করা হয়েছে, যা প্রধান হাই কমিশনের অধীনে কনস্যুলার সেবা প্রদান করে ।
বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর ধরন ও অবস্থান প্রবাসীদের ভৌগোলিক বিন্যাসের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। যেখানে প্রবাসী জনসংখ্যা বেশি, যেমন মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ভারত, সেখানে কেবল দূতাবাস বা হাই কমিশন নয়, বরং কনস্যুলেট বা সহকারী হাই কমিশনও স্থাপন করা হয়েছে । এর থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের সুবিধার জন্য কূটনৈতিক কাঠামোকে বিকেন্দ্রীকরণ করেছে। এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ যা প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সেবার চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। পর্যাপ্ত কূটনৈতিক মিশন থাকা প্রবাসীদের জন্য সেবাপ্রাপ্তি সহজ করে তোলে এবং তাদের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায়।
১.৪. তথ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর ডিজিটাল তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যায়, যা প্রবাসীদের জন্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন embassy-worldwide.com, embassies.net, ইত্যাদি থেকে সংগৃহীত ঠিকানা এবং ফোন নম্বরের তথ্য প্রায়শই মিশনের নিজস্ব সরকারি ওয়েবসাইট, যেমন mofa.gov.bd, এর তথ্যের সাথে মেলে না । এটি সম্ভবত একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেস থেকে সকল মিশন ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য হালনাগাদের কোনো ব্যবস্থা না থাকার কারণে ঘটছে।
এই তথ্যের গরমিল প্রবাসীদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে। জরুরি পরিস্থিতিতে ভুল ঠিকানায় গিয়ে সময় নষ্ট হওয়া বা ভুল নম্বরে কল করে সহায়তা না পাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রিয়াদ দূতাবাসের ঠিকানা একাধিক সাইটে ভিন্ন ভিন্নভাবে দেওয়া হয়েছে । এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি নয়, বরং প্রবাসীদের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকর সহায়তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি প্রাতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ। প্রবাসীদেরকে এই ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত এবং সর্বদা যেকোনো তথ্য যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট মিশনের নিজস্ব, সরকারি ওয়েবসাইটটি (যা সাধারণত
.gov.bd
ডোমেইন ব্যবহার করে) ক্রস-রেফারেন্স করার পরামর্শ দেওয়া হয় ।

অধ্যায় ২: প্রবাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার সেবা
২.১. পাসপোর্ট সম্পর্কিত সেবা
পাসপোর্ট একটি প্রবাসীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। বিদেশে অবস্থানকালে পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া অনলাইনে শুরু করতে হয় । প্রতিটি মিশন তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে।
হারানো বা চুরি হওয়া পাসপোর্ট
পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের জন্য একটি সাধারণ জরুরি পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে প্রবাসীকে একটি নির্দিষ্ট প্রথা অনুসরণ করতে হয় :
১. সর্বপ্রথম স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে একটি সাধারণ ডায়েরি (GD) বা পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা আবশ্যক । এই রিপোর্টে অবশ্যই হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্টের নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে ।
২. যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস বা কনস্যুলেটে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট হারানোর বিষয়ে অবহিত করতে হবে ।
৩. নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সাথে নিম্নলিখিত কাগজপত্রগুলো দাখিল করতে হবে: * পুলিশ রিপোর্টের মূল কপি ।
* হারানো পাসপোর্টের ফটোকপি (যদি থাকে) ।
* বর্তমান ভিসার ফটোকপি ।
* দেশে প্রবেশের বা আগমনী সিলের ফটোকপি ।
* সাম্প্রতিক তোলা কয়েক কপি ছবি ।
* যে দেশে অবস্থান করছেন সেখানকার বসবাসের প্রমাণপত্র, যেমন এমিরেটস আইডি, অথবা বাড়ির মালিকের আধার কার্ড ও বিলের কপি ।
৪. আবেদনকারীকে ফি জমা দিতে হয় এবং বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ, ইলেকট্রনিক প্যাডে স্বাক্ষর, ছবি) প্রদানের জন্য দূতাবাসে উপস্থিত হতে হয় ।
৫. সাধারণত, একটি নতুন পাসপোর্ট প্রস্তুত হতে ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে, তবে পুলিশ ভেরিফিকেশন বা তথ্যের গরমিলের কারণে এটি বিলম্বিত হতে পারে ।
পাসপোর্ট হারানোর মতো জরুরি পরিস্থিতিতেও প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল নয়, যার জন্য স্থানীয় পুলিশ রিপোর্টের মতো একটি কাগজের নথিপত্রের প্রয়োজন হয়। এটি প্রমাণ করে যে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এখনও একটি ডিজিটাল-কাগজ মিশ্র কাঠামোয় পরিচালিত হচ্ছে। প্রবাসীকে শুধুমাত্র দূতাবাস বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন না; তাকে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে গিয়ে একটি ম্যানুয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এই বাস্তবতাকে স্বীকার করে, একটি কার্যকর সহায়িকা তৈরি করতে এটিতে জোর দেওয়া উচিত যে, জরুরি পরিস্থিতিতে প্রথম কাজই হলো স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা।
২.২. ডকুমেন্টের অ্যাটেস্টেশন
বিদেশে বসবাসরত প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট অ্যাটেস্টেশন একটি অপরিহার্য সেবা। প্রক্রিয়াগতভাবে এই সেবা দেশ এবং মিশনভেদে ভিন্ন হতে পারে ।
- ফি ও পেমেন্ট পদ্ধতি: লস অ্যাঞ্জেলেসের কনস্যুলেট ফি নির্ধারণ করে পৃষ্ঠার সংখ্যার ভিত্তিতে ($55.00 for first 5 pages, $5.00 for each additional page) এবং পেমেন্টের জন্য ব্যাংক ড্রাফট বা অফিসিয়াল চেক গ্রহণ করে, কোনো ব্যক্তিগত চেক বা নগদ অর্থ গ্রহণ করে না । পক্ষান্তরে, কুয়ালালামপুরের হাই কমিশন মেব্যাংক-এর মাধ্যমে RM45.00 এর নির্দিষ্ট ফি গ্রহণ করে এবং কোনো অনলাইন ট্রান্সফার বা ক্যাশ ডিপোজিট গ্রহণ করে না ।
- পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (PoA): দেশে সম্পত্তি বা আর্থিক বিষয়াদি পরিচালনার জন্য PoA অ্যাটেস্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা। এই সেবার জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে কনস্যুলার অফিসারের সামনে স্বাক্ষর করতে হয় । একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা হলো, লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেট একটি নোটিশ জারি করে জানিয়েছে যে “All General Power of Attorney (POA) attestation service will be stopped until further notice” । এটি প্রবাসীদের জন্য একটি বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং এই বিষয়ে দূতাবাসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
- ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন: বিদেশে ইস্যুকৃত ডকুমেন্ট (যেমন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্যুকৃত ট্যাক্স রিটার্ন) অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে। একইভাবে, বাংলাদেশে ইস্যুকৃত ডকুমেন্ট (যেমন: বিবাহ সনদ, জন্ম সনদ) অবশ্যই ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার শাখা থেকে অ্যাটেস্টেড হতে হবে । এটি প্রশাসনিক চেইনের গুরুত্বকে পুনরায় প্রমাণ করে।
২.৩. জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন
দূতাবাসগুলো বিদেশে বাংলাদেশি নবজাতকের জন্ম নিবন্ধন সনদ (Birth Registration Certificate) এবং কোনো প্রবাসীর মৃত্যুর পর মৃত্যু নিবন্ধন সনদ (No Objection Certificate) ইস্যু করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে ।
২.৪. গুরুত্বপূর্ণ সারণি: সেবা, ফি ও প্রক্রিয়া (মিশন-ভিত্তিক তালিকা)
নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ দুটি মিশন, লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেট জেনারেল এবং কুয়ালালামপুর হাই কমিশনের কনস্যুলার সেবার তালিকা ও ফি সারণিতে উল্লেখ করা হলো।
সারণি ২: লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেট জেনারেলের কনস্যুলার সেবার তালিকা ও ফি
সেবার ধরন | স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকরণের সময় | জরুরি প্রক্রিয়াকরণের সময় | স্বাভাবিক ফি | জরুরি ফি |
পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অ্যাটেস্টেশন | ৩-৫ কার্যদিবস | ১-২ কার্যদিবস | $55.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $5.00 | $85.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $5.00 |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্যুকৃত ডকুমেন্টের অ্যাটেস্টেশন | ৩-৫ কার্যদিবস | ১-২ কার্যদিবস | $55.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $2.00 | $85.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $2.00 |
বাংলাদেশে ইস্যুকৃত ডকুমেন্টের অ্যাটেস্টেশন | ৩-৫ কার্যদিবস | ১-২ কার্যদিবস | $45.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $2.00 | $65.00 (প্রথম ৫ পৃষ্ঠার জন্য), এরপর প্রতি অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য $2.00 |

সারণি ৩: কুয়ালালামপুর হাই কমিশনের কনস্যুলার সেবার তালিকা ও ফি
সেবার ধরন | ফি (RM) | পেমেন্ট পদ্ধতি |
ড্রাইভিং লাইসেন্স অ্যাটেস্টেশন | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনুবাদ পত্র | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
পাসপোর্ট অ্যাটেস্টেশন | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
নিকাহনামা, বিবাহ/অবিবাহিত সনদ অ্যাটেস্টেশন | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
সিঙ্গেল স্ট্যাটাস লেটার | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
সম্পর্ক সংক্রান্ত চিঠি | 45.00 | মেব্যাংক-এর মাধ্যমে ডিপোজিট (Account No. 564427102268) |
অধ্যায় ৩: বিদেশে বিপদ ও মৃত্যু: করণীয় ও সহায়তা
৩.১. প্রবাসে বিপদে পড়লে করণীয়
বিদেশে অপ্রত্যাশিত বিপদ, যেমন দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে, প্রবাসীরা প্রথমেই সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাস বা হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। মিশনগুলো জরুরি পরিস্থিতিতে আইনি বা চিকিৎসা সহায়তার জন্য দিকনির্দেশনা এবং প্রয়োজনে দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য অস্থায়ী ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করতে পারে ।
এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা ‘প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার’ নামে একটি ২৪/৭ হটলাইন পরিচালনা করে, যার টোল-ফ্রি নম্বর ‘16135’ । এই কল সেন্টার প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়তা প্রদান করে। বিদেশ থেকে যোগাযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট নম্বরও রয়েছে:
+8809610102030
।
৩.২. বিদেশে কোনো প্রবাসীর মৃত্যু হলে করণীয়
বিদেশে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হলে তার মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা একটি সংবেদনশীল ও জটিল প্রক্রিয়া । এই প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা জরুরি:
১. প্রাথমিক পদক্ষেপ: কোনো প্রবাসীর মৃত্যু হলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাস/মিশনকে জানাতে হবে ।
২. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন: মৃতদেহ দেশে প্রেরণের জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি অপরিহার্য নথির প্রয়োজন হয় :
- মৃত্যু সনদ (Death Certificate)।
- কোনো সংক্রামক ব্যাধি নেই এমন সনদ (Certificate that there was no communicable disease)।
- মৃতদেহ স্থানান্তরের অনুমতিপত্র (Permit to dispose of or transport human remains)।
- জন্ম ও মৃত্যুর রেকর্ডের প্রতিলিপি (Exemplification of birth or death record)।
- মৃতের পাসপোর্টও বাতিলকরণের জন্য দূতাবাসে জমা দিতে হবে ।
দূতাবাসগুলো এই সেবা জরুরি ভিত্তিতে এবং কোনো প্রকার ফি ছাড়াই প্রদান করে ।
৩. সরকারি সহায়তা ও আর্থিক অনুদান: মৃতদেহ পরিবহণ ও দাফন খরচ বাবদ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে মৃতের পরিবারকে ৩৫,০০০ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় । এই অনুদানের জন্য নির্দিষ্ট আবেদন ফরম ও কাগজপত্র (যেমন: মৃতের পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, পরিবারের সদস্যদের ছবি এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান/কাউন্সিলর কর্তৃক সম্পর্ক নিশ্চিতকরণ সনদ) জমা দিতে হয় ।
মৃতদেহ দেশে ফেরানোর জরুরি ও মানবিক প্রক্রিয়া এবং আর্থিক অনুদানের আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য লক্ষ করা যায়। যদিও দূতাবাস জরুরি ভিত্তিতে ও বিনামূল্যে মৃতদেহ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে, আর্থিক অনুদানের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এর জন্য একাধিক সংস্থার সত্যায়ন এবং নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয় । এই ভিন্ন প্রক্রিয়াগুলো প্রবাসীর পরিবারকে মানসিক ও আর্থিক সংকটের মধ্যে ফেলতে পারে। যদিও মৃতদেহ দ্রুত দেশে আসে, আর্থিক সহায়তা পেতে দেরি হতে পারে। এই নির্দেশিকাটি এই দুই প্রক্রিয়াকে স্পষ্টভাবে আলাদা করে বর্ণনা করে, যাতে প্রবাসীরা এবং তাদের পরিবার এই জটিলতা সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত থাকেন।
অধ্যায় ৪: প্রবাসী কল্যাণ: সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা
৪.১. ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড (WEWB)
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড (WEWB) প্রবাসীদের কল্যাণে নিবেদিত একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা । এই বোর্ড প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক সেবা প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে:
- আইনি সহায়তা প্রদান ।
- অসুস্থ ও বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়তা।
- দেশে অধ্যয়নরত প্রবাসীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সহায়তা ।
- প্রবাসী কর্মীর প্রতিবন্ধী সন্তানদের মাসিক ভাতা প্রদান ।
- দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের পুনর্বাসন (রি-ইন্টিগ্রেশন) সহায়তা ।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদ পেতে একটি নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয় (উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়া থেকে $50 AUD) এবং অনলাইনে আবেদন করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ডাকযোগে হাইকমিশনে পাঠাতে হয় ।
৪.২. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিদেশ গমনে ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তার উৎস। এই ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘অভিবাসন ঋণ’ প্রদান করে । এই ঋণের একটি বিশেষ দিক হলো, এর জন্য কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখার প্রয়োজন হয় না ।
তবে, এই ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া আপাতদৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও, এর শর্তগুলো বেশ কঠোর। ঋণ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে বৈধ ভিসা থাকা, বিএমইটি ছাড়পত্র, এবং একটি সুনামধারী রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গমন নিশ্চিত করতে হয় । আবেদনপত্রের সাথে নাগরিকত্ব সনদ, ভোটার আইডি কার্ড, নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিতে হয় । এছাড়াও, দুজন জামিনদার প্রয়োজন হয়, যাদেরও বিস্তারিত তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হয় এবং তাদের একজন মাসিক কিস্তি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন । আবেদন ফরমটিতে অভিবাসন ব্যয়ের একটি বিশদ তালিকা (বিমান ভাড়া, বীমা, রিক্রুটমেন্ট এজেন্ট ফি ইত্যাদি) হাতে পূরণ করতে হয় । এই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বিশেষ করে স্বল্পশিক্ষিত প্রবাসীদের জন্য সহায়তার পরিবর্তে একটি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই শর্তগুলো মূলত আর্থিক ঝুঁকি কমানোর উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে।
৪.৩. আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM)
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) জাতিসংঘের একটি অংশ, যা বিশ্বজুড়ে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় কাজ করে । প্রবাসীদের জন্য IOM-এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেবা হলো:
- স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন (AVR) ও রি-ইন্টিগ্রেশন প্রোগ্রাম: IOM বাংলাদেশে প্রত্যাগত প্রবাসীদের সহায়তা করে। এই প্রোগ্রামের আওতায়, প্রত্যাগত কর্মীরা দেশে ফিরে ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন বা চিকিৎসা ও শিক্ষাগত সহায়তা পেতে পারেন ।
- ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন ও পরিবার পুনর্মিলন: IOM ভিসাপ্রত্যাশীদের জন্য শিক্ষাগত সনদ, বিবাহ সনদ বা জন্ম সনদের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র যাচাইয়ে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি পরিবার পুনর্মিলন (family reunification) প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা প্রদান করে ।
- যোগাযোগ: IOM-এর একটি ডেডিকেটেড হটলাইন রয়েছে:
+880-1766698777
বা+880-1766698778
।
অধ্যায় ৫: প্রধান দেশগুলোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাই কমিশনের যোগাযোগের বিবরণ
এই অধ্যায়টি এই প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যবহারিক অংশ। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল কূটনৈতিক মিশনের একটি পূর্ণাঙ্গ, বর্ণানুক্রমিক তালিকা (A-Z) দেওয়া হয়েছে, যা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সংকলিত হয়েছে । এই তালিকাটি প্রবাসীদের জন্য একটি একক রেফারেন্স গাইড হিসেবে কাজ করবে।
সারণি: বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনসমূহ
দেশ (Country) | মিশনের ধরন ও ঠিকানা | ফোন নাম্বার (Phone Number) | ইমেইল এড্রেস (Email Address) | ওয়েবসাইট | সূত্র |
অস্ট্রেলিয়া | হাই কমিশন, ক্যানবেরা | +61 2 6290 0511 | mission.canberra@mofa.gov.bd | canberra.mofa.gov.bd | |
ইতালি | দূতাবাস, রোম | +39 06 808 3595, +39 3511 766 537 (জরুরি) | mission.rome@mofa.gov.bd, embassyofbangladeshrome@gmail.com | www.bdembassyrome.it | |
কানাডা | হাই কমিশন, অটোয়া | +1 613 236 0138 | bangla@rogers.com | www.bdhcottawa.ca | |
কুয়েত | দূতাবাস, কুয়েত সিটি | +965 2 491 3219 | bdoot@kems.net | www.bdsociety.com/embassy | |
কাতার | দূতাবাস, দোহা | +974 4467 1927 | bdootqat@qatar.net.qa | bdembassydoha.org | |
গ্রিস | দূতাবাস, এথেন্স | +30 2106720250 | mission.athens@mofa.gov.bd | www.athens.mofa.gov.bd | |
দক্ষিণ আফ্রিকা | হাই কমিশন, প্রিটোরিয়া | +27 12 343 2105 | bangladeshpta@iburst.co.za | – | |
মালয়েশিয়া | হাই কমিশন, কুয়ালালামপুর | +603-2604-0946/48/49 | mission.kualalumpur@mofa.gov.bd | www.bdhckl.gov.bd | |
মালদ্বীপ | হাই কমিশন, মালে | +960 3315 541 | bdootmal@dhivehinet.net.mv | male.mofa.gov.bd | |
যুক্তরাজ্য | হাই কমিশন, লন্ডন | +44 20 7584 0081 | info@bhclondon.org.uk | www.bhclondon.org.uk | |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | দূতাবাস, আবু ধাবি | +971-2-4465100 | mission.abudhabi@mofa.gov.bd | abudhabi.mofa.gov.bd | |
সিঙ্গাপুর | হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর | +65 6255 0075 | mission.singapore@mofa.gov.bd | www.singapore.mofa.gov.bd | |
স্পেন | দূতাবাস, মাদ্রিদ | +34 914019932, +34 914023085 | mission.madrid@mofa.gov.bd | madrid.mofa.gov.bd | |
সৌদি আরব | দূতাবাস, রিয়াদ | +966 11419 5300 | mission.riyadh@mofa.gov.bd | www.bangladeshembassy.org.sa | |
ভারত | হাই কমিশন, নিউ দিল্লি | +91 11 2412 1389 – 94 | email@bdhcdelhi.org | www.bdhcdelhi.org | |
ওমান | দূতাবাস, মাসকাট | +968 24-698-660 | bangla@omantel.net.om | muscat.mofa.gov.bd | |
জর্ডান | দূতাবাস, আম্মান | +962-6-552-9192 | embangla@joinnet.com.jo | www.bdembassyjordan.com | |
বাহরাইন | দূতাবাস, মানামা | +973 17233925 | mission.manama@mofa.gov.bd | bdembassy.org.bh | |
লেবানন | দূতাবাস, বৈরুত | +961 1842 586 | mission.beirut@mofa.gov.bd | – | |
যুক্তরাষ্ট্র | দূতাবাস, ওয়াশিংটন ডি.সি. | +1 202-244-0183 | bdootwash@bdembassyusa.org | washington.mofa.gov.bd |
বিঃ দ্রঃ একাধিক উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্যের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে অমিল বা অসঙ্গতি দেখা গেছে। একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন হিসেবে, আমরা একাধিক উৎস যাচাই করে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যটি প্রদান করেছি

অধ্যায় ৫: প্রবাসী কল্যাণ হটলাইন ও জরুরি যোগাযোগ
প্রবাসীদের জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হটলাইন নম্বর চালু করেছে। এই হটলাইনগুলো প্রবাসীদেরকে সঠিক কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুত সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে চাপ ও বিভ্রান্তি হ্রাস করে।
৫.১. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হটলাইন
- ‘প্রবাস বন্ধু’ কল সেন্টার: এটি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত একটি ২৪/৭ হটলাইন । এই কল সেন্টারের মাধ্যমে প্রবাসীরা বৈদেশিক কর্মসংস্থান, ঋণ সহযোগিতা, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান পেতে পারেন ।
- দেশ থেকে: ১৬১৩৫ (টোল ফ্রি) ।
- বিদেশ থেকে:
+8809610102030
।
৫.২. অন্যান্য জরুরি হটলাইন
- শ্রমিক আইন সহায়তা সেল: ০১৭৯৯-০৯০০১১, ০১৭৯৯-০৯০০২২ ।
- নারী অভিবাসন তথ্য সেবা: ৮৩২৩০০৪, ৮৩২২৯৪৬, ৮৩১৭৫১১ ।
- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা: ১৩৬০০ বা ০৯৬১৪-০১৩৬০০ ।
- প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, ঢাকা জেলা পুলিশ: ০১৩২০-০৮৯৩৩৮ (Whatsapp, Viber, Imo এর জন্য) ।
- ই-মেইল: expatriateandoverseashelpdeskd@gmail.com ।
হটলাইন/যোগাযোগ কেন্দ্র | যোগাযোগ নম্বর | সেবার ক্ষেত্র | কার্যকারিতার সময় |
প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার | ১৬১৩৫ (দেশ থেকে, টোল ফ্রি) +৮৮০৯৬১০১০২০৩০ (বিদেশ থেকে) | প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও ঋণ সহায়তা | ২৪/৭ খোলা |
শ্রমিক আইন সহায়তা সেল | ০১৭৯৯-০৯০০১১, ০১৭৯৯-০৯০০২২ | শ্রমিক আইন ও আইনি সহায়তা | নির্দিষ্ট সময় |
নারী অভিবাসন তথ্য সেবা | ৮৩২৩০০৪, ৮৩২২৯৪৬, ৮৩১৭৫১১ | নারী অভিবাসীদের জন্য তথ্য ও সহায়তা | নির্দিষ্ট সময় |
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক (বিমানবন্দর) | ১৩৬০০ / ০৯৬১৪-০১৩৬০০ | বিমানবন্দরের জরুরি সহায়তা | নির্দিষ্ট সময় |
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক (ঢাকা জেলা পুলিশ) | ০১৩২০-০৮৯৩৩৮ | আইনগত সহায়তা (Whatsapp, Viber, Imo সহ) | সকাল ১০:০০ ঘটিকা থেকে বিকাল ০৫:০০ ঘটিকা |

প্রবাসীদের প্রতি বার্তা
এই প্রতিবেদনটি একটি ব্যাপক এবং নির্ভরযোগ্য গাইডলাইন হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। প্রবাসীদের প্রতি আমাদের বার্তা হলো: সচেতন থাকুন, সকল গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণ করুন এবং জরুরি পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে এই নির্দেশিকা অনুসরণ করুন। প্রবাসে কোনো বিপদে পড়লে, সঠিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের উচিত যাত্রার আগে তাদের পাসপোর্ট, ভিসা, কর্মসংস্থান চুক্তি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথির একাধিক ফটোকপি ও স্ক্যান কপি সংরক্ষণ করা। এই নির্দেশিকাটি শুধুমাত্র একটি তথ্য সংকলন নয়, বরং প্রবাসে আপনার নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
দায়বর্জন-বিবৃতি:
এই ব্লগ পোস্টের সকল তথ্য বিভিন্ন গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র তথ্য ও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে লিখিত। কোনো স্বাস্থ্যগত, ব্যবসায়িক বা আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন পেশাদারি বিশেষজ্ঞ বা আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণ করবেন। এই ব্লগে প্রদত্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোনো পদক্ষেপ নিলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার আপনার উপর বর্তাবে।
ধন্যবাদ! আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে এই লেখাটি পড়ার জন্য। আশা করি, এটি আপনার সুস্থ জীবনযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে।